ফিরে দেখা

কলম ধরেছেন – মৃগাঙ্ক বসাক

ফিরে দেখা
মৃগাঙ্ক বসাক

কোথা থেকে শুরু করা যায়, সেটাই একটা সমস‍্যা। কেননা, অনেক কথার ভিড়ে প্রথম কথাটাই যে হারিয়ে যায় প্রায়শঃই । তবুও লিখছি, তা যেখান থেকেই শুরু হোক না কেন ।

যে পথ দিয়ে জীবনের যে এতগুলো মূহুর্ত পেরিয়ে এলাম, উত্থান-পতনের কত অভিজ্ঞতার মধ‍্যে দিয়ে, সেই পথে পুরনো দিনের টুকরো টুকরো কিছু স্মৃতি, যা আজও আমার জীবনের পাথেয় হয়ে রয়েছে, তারই কিছুটা অংশ নিয়ে একটা ছোট্ট সংকলনের প্রচেষ্টা এই ‘ফিরে দেখা’য় ।

“ভালোবেসে বেসে বাসোরে ভালো, নইলে বেসো না।
……. মুখে যত বলি, ‘শালা’ মন মানে না।…”

এটা 1974 এর ঘটনা । আমরা তখন বেলুড় রামকৃষ্ণ মিশন বিদ‍্যামন্দিরের 3rd year এর ছাত্র । শীতের এক সন্ধ‍্যায় হঠাৎই আমাদের মাথায় ভূত চাপলো – বিদ‍্যামন্দিরে এবারে “Social” করতে হবে (যা বিদ‍্যামন্দিরের ইতিহাসে এর আগে কোনদিন ঘটেনি)। এ জাতীয় যে কোন কুবুদ্ধিই প্রথমে আমাদের Hostel ‘শ্রীভবন’ থেকে generate হ’ত। পরে বাকী Hostel গুলোকে (‘বিদ‍্যাভবন’, ‘বিবেকভবন’ এবং ‘বিনয়ভবন’) align করতে বেশী কাঠখড় পোড়াতে হ’ত না । তবে আমরা ভালো করেই জানতাম আমাদের ‘শ্রীভবন’ Hostel Warden চিত্ত মহারাজের (ব্রহ্মচারী কল্যাণ চৈতন‍্য) সম্মতি পাওয়া খুবই দুরুহ ব‍্যাপার । তাই আমরা অমলদার শরণাপন্ন হ’লাম । অমলদা আমাদের বছর দুই / তিনেকের
Senior – রামকৃষ্ণ মিশনের ‘সেবক’ – Calcutta University তে Physics এ M.Sc. করছেন । তাছাড়া উনি আমাদের তদনীন্তন Principal মহারাজেরও (স্বামী শিবময়ানন্দ, যিনি পরবর্তীকালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের Vice President ও ছিলেন, সম্প্রতি দেহরক্ষা করেছেন)ভীষণ স্নেহধন‍্য । উনি শ্রীভবনের তেতলায় একটা Single Room এ থাকতেন । চিত্ত মহারাজকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে উনিই একরকম রাজী করান । (প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, অমলদা বর্তমানে রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু , নাম স্বামী দিব‍্যানন্দ এবং উনি এখন রামকৃষ্ণ মিশন সারদাপীঠ এর Secretary) ।

যাইহোক, finally অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, অনেককিছু commitment করে এবং মুচলেকা দিয়ে বিদ‍্যামন্দিরের management কে convince করে বিদ‍্যামন্দিরের ইতিহাসে এই প্রথম বাইরের শিল্পী সমাগমে ছাত্রদেরই চাঁদার পয়সায় জলসা হচ্ছে । সেসময়কার অনেক নামীদামী শিল্পীই নামমাত্র পারিশ্রমিকে গাইতে রাজী হয়েছেন । হেমন্ত, মানবেন্দ্র, দ্বিজেন মুখার্জি, পিন্টু ভট্টাচার্য, সঙ্গতে রাধাকান্ত নন্দী ইত্যাদি তারকাদের একত্র সমাগমে আমরা স্বভাবতঃই ভীষণই excited.
Auditorium মঞ্চে তখন প্রথম শিল্পী পিন্টু ভট্টাচার্য । নীচে দর্শকের আসনে সতরঞ্চিতে বসে ছাত্ররা,  ওপরে ব্যালকনিতে চেয়ারে আসীন শাণিত চক্ষুকর্ণ  মিশনের মহারাজবৃন্দ (সাদা আর গেরুয়া বসনধারী ব্রহ্মচারী ও সাধুবৃন্দ) । মামু (সুশান্ত প্রামাণিক), অসীম, তপন সোম প্রভৃতি অভিজাত ছাত্ররা সদ্য ইস্ত্রী ভাঙা জামাকাপড় পরে ব্যস্তবাগীশ গ্রীনরুম আর মঞ্চে আনাগোনা করছে । বারবার পীড়াপীড়ি করাতে শিল্পী একসময় ধরলেন ‘সাগিনা মাহাতো’ ছবির উপরের গানটি (অনুপ ঘোষাল বা আরতি মুখার্জি ব‍্যতিরেকেই ) ।

ছাত্ররা উত্তেজনায় অধীর । এগিয়ে আসছে সেই লাইনটি যাতে রয়েছে সেই মোক্ষম শব্দ, যা একবার মাইকে উচ্চারণ হয়ে গেলেই উড়বে ছাত্রদের বিজয় পতাকা আর প্রবলপ্রতাপ অত্যাচারী শাসককুল হবে সম্পূর্ণ পরাভূত, নতমুখ ।

কিন্তু এ কী টানা পোড়েন ? শিল্পী বারবার এগিয়ে যাচ্ছেন ঐ শব্দটি পর্যন্ত, আবার পিছিয়ে আসছেন । প্রতিবারই লাফিয়ে উঠতে যাচ্ছে অসিতাভ – আর, খুশী (অসিতবরণ) টেনে ধরছে তাকে । মঞ্চে ভলান্টিয়ারদের হাত উঠতে গিয়ে নেমে আসছে বারবার । এ যেন সেই চূণী গোস্বামীর গোলের কাছে বারবার এগিয়ে গিয়ে পিছিয়ে আসা । হল কী শিল্পীর ? ভুলে গেলেন নাকি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শব্দটাই?

না, উনি ভোলেননি কিছুই । চোখকান খোলাই ছিল । দেখে নিয়েছেন – যেই ওখানটায় পৌঁছাচ্ছেন, চাঞ্চল্য ব্যালকনিতেও । বেশ কিছু সাদা আর গেরুয়া মূর্তি চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাচ্ছেন আর হাত উঠিয়ে ‘হাঁ হাঁ’ করে উঠছেন যেন । এদিকে মাঝখানে গান ছেড়ে দিলে সবাই বলবে পিন্টু ভট্টাচার্য দুয়ো, হেরে গেল । যতক্ষণ না একটা লাগসই শব্দ খুঁজে পাচ্ছেন এগিয়ে-পিছিয়ে অসিতাভদের নাড়ীর গতি 120 পার করে দিয়ে শেষে গেয়ে উঠলেন – মুখে যত বলি ‘তবু’ মন মানে না ।

এতক্ষণ ধরে এত উত্তেজনা সৃষ্টি করে  তবু … তবু … তবু …. শেষকালে শুধুই  ‘তবু’ !!!
হায়রে, প্রচণ্ড হতাশায় অনেকেই ভালো করে খেতেই পারল না সে রাতে ।

NCC

NCC (National Cadet Corps) বা NSS (National Service Scheme) এ join করা আমাদের সময় স্কুলে বা কলেজে বাধ্যতামূলক ছিল । বিদ্যামন্দিব়েও NCC বাধ্যতামূলক ছিল Part-I পৰ্যন্ত । যতদূব় মনে আছে, শুধুমাত্র Honours এব় ছেলেদেব় জন্য 2nd year এ NCC optional ছিল। একমাত্ৰ আমাদেব় NCC ব়ত্ন সুব়জিতই বোধহয় শেষ পৰ্যন্ত NCC তে serve করে নানা ব়কমেব় special training এবং camp attend কব়াব় সৌভাগ্য অৰ্জন কব়ে, এমনকি C-Certificate পর্যন্ত হস্তগত করে।

আমাদেব় কাকুব় (স্বপন সাধুখাঁ) সাইজেব় বুট ছিল না। কাকু প্ৰত্যয়েব় সংগে বলেছিল – আমি খালি পায়েই ওদেব় সব্বাব় চেয়ে ভালো parade কব়তে পাব়ি (প্ৰথম দিকে যেমন মোহনবাগান ফুটবলাররা গোব়াদেব় বিব়ুদ্ধে খেলতে নামতেন) । সম্ভবতঃ NCC ব় Solemnity ব় কথা ভেবেই কুণ্ডু স্যাব় ওকে allow কব়েননি । সব  চাইতে লম্বা (প্রায় 6 ফুট 4 ইঞ্চি) হিসাবে marching column এ সবাব় আগেব় cadet ( নয়তো সবাব় শেষেব়) থুতনি পৰ্যন্ত হাঁটু তুলে সতেজে parade কব়ছে অথচ তাব় পায়ে জুতোই নেই এবং প্যান্টটি কষ্টেসৃষ্টে থ্ৰি কোয়াৰ্টাব় – এই দৃশ্যেব় কল্পনা তাঁব় মতো কড়া NCC Officer এব় হৃদয়কেও বিচলিত কব়ে থাকবে হয়তো ।  তাই Parade এব় সময় একধাব়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো কাকুকে ।

আব় এক বন্ধুব় (অনিমেষ) কথা মনে আছে । তাব় নিজেব় ওজনেব় চেয়ে NCC ব় পোষাক ইত্যাদি বেশি ভাব়ী ছিল। Parade শেষে যখন সবাব় পিছনে বুটজোড়া টেনে টেনে ইঁটে বাঁধা ব়াস্তা দিয়ে   ফিব়ত, সে এক ভাব়ী কব়ুণ দৃশ্য। মধ্যযুগে বন্দীদেব় পায়ে চেন দিয়ে লোহাব় ভাব়ী বল বেঁধে চলাব় মতো । Part-I এব় Admit Card পাবাব় জন্য বা ঐব়কম কিছু একটা ব্যাপাব়ে NCC ব় clearance লাগত । ঝুল, ধূলো এবং বাদামেব় খোসায় আচ্ছন্ন  এক বছব় পড়ে থাকা (পুরো 2nd year টা) পোষাক, বেল্ট, তকমা আব়  বুটজোড়া অত্যন্ত বিতৃষ্ণাব় সংগে খাটেব় তলা হতে বাব় কব়ে  গেল সে জমা দিয়ে clearance নিতে ।

চমকে ওঠেন স্যাব় – একী ? দুটো জুতোই যে ডান পায়েব় ! একী কাণ্ড ?

# অমনিই পেয়েছিলাম স্যাব়, বিশ্বাস কব়ুন ।

# হতেই পাব়ে না । আচ্ছা, তুমি ভূত নয়ত ? ভূতদেব় শুনেছি পায়েব় পাতা পিছন দিকে পড়ে । দুটোই ডান পা হলেও হতে পাব়ে । দেখি তোমাব় পায়েব় পাতা । এই তো, ঠিকই আছে । চালাকি কব়ছ আমাব় সাথে ?

# স্যাব়, আমাব় আসতে দেব়ী হোল । বিচ্ছু বন্ধুগুলো আগেভাগেই কুড়িয়ে বাড়িয়ে জমা দিয়ে দিল । এটাই শুধু পড়েছিল । এব় আগে নিশ্চই কেউ দুটো বাঁ পায়েব় জমা দিয়ে clearance নিয়ে গেছে । দেখবেন স্যাব় আমাব় কথা, আপনি একদিন না একদিন নিশ্চয়ই খুঁজে পাবেন ।

# তোমাব় clearance ততদিন পব়ে নিলে চলবে তো ?

# সেকী স্যাব়, আমাব় Part-I পব়ীক্ষা ?

# তাহলে তুমি ঐ জোড়াটা খুঁজে দাও, যেটা বলছ তোমাব় বন্ধু আগেই দিয়ে গেছে ; আঙুল তুলে দেখান তিনি দেড়শো জোড়া বুটেব় গাদাব় দিকে । কাছে  যেতেই সামুহিক গন্ধে নাড়ী উল্টে আসে বন্ধুটিব় ।

# পেব়ে উঠব না স্যাব় । যদি চেষ্টাও কব়ি, ততদিনে Part-II পব়ীক্ষাও পেব়িয়ে যাবে ।

# তাহলে জমা কব়ো ২৬ টাকা ৬৩ পয়সা । আব় তো কোন উপায় দেখছি না ।

# বুকভাঙা এক সুদীৰ্ঘ শ্বাস ফেলে হস্টেলে ফিব়ে fine এব় টাকা নিয়ে গিয়েছিল সে । কতো বাদাম, কতো ছানাব় জিলিপি আব় কতোই না সিনেমা হতে পাব়তো সেই টাকায় ?

ফুটবল ম‍্যাচের বিড়ম্বনা

শাব়ীব়িক পটুতায় বোধহয় অনিমেষ এব় ঠিক ওপব়েই ছিল আমাব় স্থান । অন্য  বন্ধুব়া যখন বীব় বিক্ৰমে ফুটবল ক্ৰিকেট খেলত তখন আমাব় দৌড় বড়জোব় ঐ ব্যাডমিন্টন বা Table Tennis এ
দু একটা গুঁতো মাব়া পৰ্যন্ত । অনিমেষ সম্ভবতঃ তাও খেলে নি ।

Common Room এব় ব়েডিওতে ক্ৰিকেট বা ফুটবলেব় commentary হলে বিশেষ কিছু না বুঝলেও অন্যদেব় সাথে দাঁড়িয়ে থাকতাম, নইলে সবাই যে unsmart বলবে । বিশেষজ্ঞ বন্ধুব়া যখন কোনটা সিল্লি মিড অন আব় কোনটা গালি – এই নিয়ে তৰ্ক কব়ত তখন অবাক হয়ে ভাবতাম এব়া কতোই না জানে !

একবাব় এক বন্ধুব় (কে ঠিক মনে নেই) পাল্লায় পড়ে ‘মোহনবাগান ইষ্টবেংগলেব় অন্ততঃ একটা ম্যাচ যে না দেখেছে তাব় জনম বৃথা’ মেনে নিয়ে ভোব়বেলায় বেব়ুলাম হস্টেল থেকে । অনুমতি নেবাব় প্ৰশ্নই ওঠে না কাব়ণ অনুমতি পাওয়া যাবে না । সকাল সাতটাব় আগেই ময়দানে লোকাব়ণ্য । অনেক কাউন্টাব়, অনেক সৰ্পিল লাইন, আমব়া একটাব় শেষে দাঁড়াই । দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পা হলো কাঠ । কাউন্টাব় খুললো বোধহয় ১০টায় । ১১টাব় সময় যখন আব় ৩০ জন হলেই হাতে আসবে সেই সাধনাব় ধন, কাউন্টাব় হলো বন্ধ । কাউন্টাব়েব় কাছে ছিল যাব়া, দমাদম ঘুষি মাব়ে কাউন্টাব়ে । কি হচ্ছে বোঝাব় আগেই এগিয়ে আসে mounted .police ব়া । পালাও, পালাও, প্ৰাণ বাঁচাও । ক্লান্ত, বিধ্বস্ত হয়ে ফিব়ে আসি, সকাল থেকে চা টুকুও যায় নি পেটে । কলেজেব়  ভেতব় দিয়ে যাবাব় সময় কে যেন বলল – তোদেব় নামে ফাইনেব় list ঝুলছে Notice Board এ । তা দেখাব় শক্তিও ছিল না । সোজা গিয়ে বিছানায় লম্বা, ওঠা সেই সন্ধ্যায় ।

এব় ৩/8 বছব় পব় Calcutta University ব় Rajabazar Science College Campus এ B.Tech পড়াব় সময় মোহনবাগান নিয়ে আসে Cosmos Club আব় পেলেকে – মোহনবাগানেব় সাথে একটা exhibition match খেলতে। তাই নিয়ে মোহনবাগানেব় supporter দেব় সে কী ব়োয়াব ! ইস্টবেংগলেব় supporter দেব় উদ্দেশ্যে একজন বলে – সাত জন্ম  তপস্যা  কব়লেও তোব়া পেলেব় সাথে খেলতে পাব়বি না । আব় একজন বলে – হবে কি কব়ে ?  শুঁটকি মাছেব় গন্ধ কি সাত জন্মেও যায় ? Pele is a gentleman – গায়ে শুঁটকি মাছেব় গন্ধ থাকলে পেলে তাব় কাছেই আসবে না, খেলা তো দূব় ।

খেলাব় দিনে দেখা গেল আমাদেব় Part II পব়ীক্ষাব় একটা paper ব়য়েছে । HOD কে ধব়া হলো । উনি বললেন – বিলক্ষণ, পেলে বলে কথা । আমি Controller এর সাথে কথা বলে পব়ীক্ষা এক ঘণ্টা এগিয়ে দিচ্ছি, তোমব়়া সময় থাকতে বাড়ী / হস্টেলে ফিব়ে TV তে খেলা দেখো ।(সম্ভবতঃ ঐদিন দুটোব় পব় গোটা কোলকাতাই ছুটি হয়ে গিয়ে থাকবে)।

আমি তখন বরানগরে এক বাড়িতে paying guest হিসেবে থাকি । যদিও ছাত্র পড়িয়ে এলাকাতে তখন বেশ নামডাক এবং পরিচিতিও বেড়েছে অনেক, কিন্তু ভেবে দেখলাম এই ভরদুপুরে বরানগরে পৌঁছে TV দেখার জন‍্য কারও বাড়ীতে হানা দেওয়াটা বোধহয় যথোচিত হবে না । তাই পাশেই Radio Physics Department এ গিয়ে জগন্নাথ তাতাচারীর সাথে দেখা করি (আমি Applied Physics পড়ি আর তাতাচারী ও অনিমেষ, যারা বেলুড়ে Physics Hons. এ আমারই batch mate ছিল, তখন Radio Physics পড়ে)। ওরা দুজনেই বালিগঞ্জে University র Hostel (Tech Hall) এ থাকে । TV তে match দেখতে ওদের সাথে যাবো বলাতে, ওরা তো খুশির আতিশয্যে রাত্রিটা ওখানেই কাটিয়ে যাওয়ারও আমন্ত্রণ জানিয়ে দিল ।

মনে আছে দিনটা শনিবার ছিল । যথাসময়েই Tech Hall এ পৌঁছে গেলাম । দেখলাম Hostel এর Common Room এ তিলধারনের জায়গা নেই । যাইহোক, ম‍্যাচ যথারীতি শুরু হ’ল ।

এতো সব কাঠখড় পুড়িয়ে শেষে চূড়ান্ত হতাশা । তখন এতগুলি ক্যামেব়া দিয়ে Telecast হতো না । Slow motion ইত্যাদিও এখনকাব় মতো দেখাত না । চোখেব় পাতা না ফেলে সাব়াক্ষণ TV ব় দিকে তাকিয়েও Pele ব় ম্যাজিক কিছুই দেখা গেল না – শুধুমাত্র গোলে একটা shot ছাড়া, যেটি অত‍্যন্ত ক্ষিপ্রতার সাথে শিবাজী ব‍্যানার্জী save করেন । ম‍্যাচ শেষপর্যন্ত 2 – 2 গোলে draw হ’ল (Cosmos Club এর পক্ষে গোল করেন Carlos Alberto এবং কে একজন যেন, নাম ভুলে গেছি আর মোহনবাগানের পক্ষে শ‍্যাম থাপা ও মহঃ হাবিব)।

ওদিকে, যাব়া পষ্ট কথা বলে তাব়া তো বলেই দিলে – এই পেলে ? এব় জন্যে এতো ? “ধূ ঊঊঊঊ ব় শালা” !

আর যাব়া কট্টব় কমিউনিষ্ট, তাব়া তবু ছাড়ে না(পেলে নিগ্ৰো, তাই স্বতঃ কমিউনিষ্ট – নিগ্ৰো ভাই আমাব়, পল ব়োবসন!)। ঐ দেখলি না, একবাব় attack কব়লো, কি বিদ্যুৎগতি, যদিও এক ঝলক । কিন্তু বেশীব় ভাগ ছেলেদেব় ‘ধূ ঊঊঊ ব়’ বাণীব় শব্দে কমিউনিষ্টদেব় গলা চাপা চড়ে গেল ।
পব়দিন সকালে এক বিশেষ সংবাদদাতা জানালেন যে তিনি তাঁব় বিশ্বস্ত সূত্ৰে জেনেছেন যে পেলেব় বীমা কম্পানী শেষ মূহুৰ্তে বলে দেয় যে কলকাতাব় এবড়ো খেবড়ো মাঠে পড়ে গিয়ে যদি পেলেব় ঠ্যাং ভাঙে তাহলে তাব়া একটি পয়সাও দেবে না । পেলেব় ডান এবং বাঁ ঠ্যাং নাকি যথাক্ৰমে দেড় কোটি এবং আড়াই কোটি ডলাব়ে বীমা কব়া আছে । অতগুলি টাকা না পাবাব় ভয়েই পেলে কাল আদৌ খেলেননি ।

Sting operation কব়ে আসল খবব়টি বেব়ুল তাব় পব়েব় দিন । পেলে নাকি আদৌ কলকাতায় আসেন নি । শান্তিগোপাল নামে একজন বিখ্যাত যাত্রাভিনেতা পেলে সেজে মাঠে নেমেছিলেন । পেলে নাকি খেলাটিব় ভিডিও ব়েকৰ্ডিং দেখে মুগ্ধ হয়ে বলেছেন – এতো অবিকল পেলেব় মতো তিনি নিজেও নাকি কোনদিন হতে পাব়বেন না এবং ব়য়েলটি হিসাবে যে টাকা উনি পেতেন তা শান্তিগোপালকে পুব়স্কাব় দিয়েছেন ।

শান্তিগোপাল সে সময় প্ৰতি বছব় এক মহামানবেব় ভূমিকায় (লেনিন, মাৰ্ক্স, মাও ইত্যাদি) অভিনয় কব়ে অত্যন্ত জনপ্ৰিয় হয়েছিলেন । কাজেই অনেকেই বিশ্বাস কব়লেন ।   ইস্টবেংগলেব় supporter ব়াও ভাব়ী খুশী হল আব় মোহনবাগানেব় supporter ব়া বেশ কিছুদিন মনমব়া হয়ে ব়ইলো ।

*****************************

 

About the author :

Mriganka Basak, age 68 years, was an Engineering professional. He had worked with various companies for long years. Now after his retirement, he lives at Bharuch (Gujrat).