অরিজিৎ কথঞ্চিত by Arijit Choudhuri

রিজার্ভেশন

হ্যারি পটারের গল্পের ভিলেন ভলডেমর্ট সম্পর্কে বলা হয় ‘হি হু মাস্ট নট বি নেমড’। রিজার্ভেশন-এর  রকমফের আছে, কিন্তু সবচেয়ে বেশী আঁকড়ে ধরা আবেগ আর অন্ধ ক্রোধ চাকরি আর শিক্ষায় রিজার্ভেশন নিয়ে। এ জন্য সাধারণের মধ্যে সে দুটি বিষয় ‘টপিকস দ্যাট মাস্ট নট বি টেকেন আপ’ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবুও, পক্ষে বিপক্ষে কিন্তু শেষ নেই চাপা গলায় আলোচনার। যারা প্রকাশ্য তাঁদের একজনকে বলতে শুনলাম লালু প্রসাদ, মায়াবতী অথবা অন্য কোন দলিত নেতা ছাড়া তাঁদের উন্নতির চেষ্টা করবে না কেউ। অথচ দেখুন, দলিত বা পিছিয়ে পড়া মানুষের সব চেয়ে বড় সমস্যা খাদ্যের। স্বাধীনতার সময়ের তুলনায় এখন লোকসংখ্যা প্রায় চার গুণ। সেটির সমাধানে সব চেয়ে বড় কাজ করে ফেলেছেন উঁচু জাতের এম এস স্বামীনাথন। দুধের যোগান বাড়াতে যার অবদান সর্বাগ্রে সেই ভার্গিস কুরিয়ান-ও দলিত ছিলেন বলে শুনি নি। তবু, একদলের দৃঢ় বিশ্বাস রিজার্ভেশনের পথেই ভারতের উন্নতি। অন্য দলের স্থির ধারণা রিজার্ভেশনের জন্যই ভারতের উন্নতি আটকে আ্রছে। সন্দেহ হয়, উন্নয়নের আসল উপায়টি হয়তো দুই মতের মাঝের বেড়ায় বিচরণ করছে।

ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই ছোট সে তরী – জাতি, উপজাতি, মহিলা আর গরীব নিয়ে রিজার্ভেশনের একটি লিস্ট যে সরকারী অফিসে দেওয়া হয় সেখানে খালি জায়গা হয়তো দু’টি বা একটি। তাতে ঠাসাঠাসি করে অন্ততঃ দশজন না ঢোকালে নিয়ম পালন করা যায় না। তা ছাড়া, ১৪০ কোটি মানুষের কেন্দ্র ও রাজ্য মিলিয়ে সরকারী চাকরি মাত্র দু’ কোটি। এর পুরোটা রিজার্ভ করে রাখলেও কষ্ট ও ক্ষোভ নিরসন হবে না। নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি যে কতটা ভয়ানক হতে পারে তার উদাহরণ মণিপুর। সংখ্যাগুরু মেইতেইদের উপজাতি হিসেবে রিজার্ভেশন দেওয়া নেই সেখানে অভূতপূর্ব যে দাঙ্গা মে মাসে শুরু হয়েছে, তা শাখা-প্রশাখায় ছড়িয়ে গেছে। আগুন এখনও নেবে নি। দাবি উঠছে বেসরকারি চাকরিতেও (মোট ৪০ কোটি) রিজার্ভেশন দেওয়ার। তাতে এখনকার আইন মেনে  আরও প্রায় ২০ কোটি চাকরি রিজার্ভেশন এর আওতায় আসবে ঠিকই, কিন্তু ৯৪ কোটি কর্মক্ষম মানুষের দেশে সেই সংখ্যাও যথেষ্ট হবে না। শুধু তাই নয়, নিজেদের ইচ্ছেমত লোক নিয়োগ করার স্বাধীনতা না থাকায়, বেসরকারি উদ্যোগগুলিরও বিদেশ প্রস্থানের সম্ভাবনা (ইন্দিরা গান্ধী কোম্পানিগুলোর ওপর ট্যাক্স বাড়িয়ে দেওয়ায় এ রকম ঘটেছিল)।

কিছুতেই যেন দীর্ঘ পথের অন্ত নাহি হেরি– ভারতে রিজার্ভেশনের ইতিহাস অনেক পুরনো। ১৮৮২ সাল থেকেই তা নিয়ে আন্দোলনের কথা শোনা যায়। ১৯০২ সালে কোলাপুরের রাজা ছত্রপতি সাহুজী অব্রাহ্মণ ও পিছিয়ে পড়া জাতগুলির জন্য ৫০% রিজার্ভেশন চালু করেন। ১৯১৮ সালে মহীশূরের নালভাড়ি কৃষ্ণ রাজা ওয়ারিয়ার পিছিয়ে থাকা অব্রাহ্মণ জাতিগুলির ক্ষোভ নিরসনের ইচ্ছায় শিক্ষা ও সরকারী চাকরিতে তাদের পরিস্থিতি বিচার করার জন্য বৃটিশ সিভিল সারভ্যান্ট স্যার লেসলি মিলারকে নিয়োগ করেন। মিলার সাহেব ২৫% রিজার্ভেশনের কথা তোলেন। তার পর স্বাধীন দেশে রিজার্ভেশনের ৭৫ বছর কেটে গেলেও শিক্ষা বা চাকরির উঁচুতলায় পশ্চাৎপদ নীচু জাতের উপস্থিতি বেশ কম। রিজার্ভেশনের পক্ষে তথ্য ও যুক্তি দিয়ে যোগেন্দ্র যাদব বলেন, ২০% মানুষ ধরে রেখেছে ৮০% চাকরি। তিনি আরও বলেন, এখনকার ভারতে দলিতদের ওপর অত্যাচার সামান্য কমে থাকবে, কিন্তু তার বিলুপ্ত হবার কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তাদের সব মন্দিরে ঢুকতে দেওয়া দূরস্থান, ভারতের নানা জায়গায় এখনও দলিতরা গোঁফ রাখলে বা ঘোড়ায় চড়লে পিটুনি দেবার প্রাচীন ব্যবস্থা বহাল। তবে, এর কারণ রিজার্ভেশনের অপ্রতুলতা, না আইন প্রয়োগে ঢিলেমি তা ভাবা প্রয়োজন।   

প্রকৃতি কি বলেনপণ্ডিত ক’ন, প্রকৃতির দাবী- সবাই সমান হোক,                                                                               

                     সমতা চেয়েছে মানুষই, জানে বুঝদার লোক।  

প্রকৃতির যে সমতা নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই, তা একটু চোখ খুললেই দেখা যায়। একই বাবা-মা’র দুই সন্তানের বুদ্ধিমত্তা, পেশীবল বা উচ্চতা সমান হয় না।  দুটো সিংহ সমান জোরে দৌড়তে পারে না, দুটো পিঁপড়ে সমান ওজনের চিনি বইতে পারে না। যদি আমরা মানুষকে ঈষৎ আলাদা করে ভাবি, তাহলে দেখব সমতা মানবিক, অসাম্য প্রাকৃতিক।  

দুর্বলকে সক্ষম হতে সাহায্য করা, পিছিয়ে পড়া দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করা, প্রকৃতির নয়, মানুষের গুণ। তাতে তার লাভ হয়েছে অনেক। প্রতিবন্ধী হেলেন কেলার, স্টিফেন হকিং মানুষের সমাজ ও জ্ঞানকে যতটা প্রগতির দিকে নিয়ে গেছেন, শারীরিকভাবে তাঁদের চেয়ে অনেক শক্তিশালী মানুষ তার অতি ক্ষুদ্র ভগ্নাংশও অর্জন করতে পারেন না। পিছিয়ে পড়া সমাজ থেকে উঠে আসা আম্বেদকরকে জায়গা না দিলে ভারতের দিগদর্শক সংবিধান কী রকম দাঁড়াতো, পাকিস্তানের আজকের অবস্থা দেখলে তা আর কষ্টকল্পনার বিষয় থাকে না। শুধু তাই নয়, বহু যুগ ধরে ‘পুরুষেরা বাহিরে সুন্দর, মেয়েরা অন্তঃপুরে’ গান গাইবার পর দেখা যাচ্ছে মেয়েরা যে সব কোম্পানির একজিকিউটিভ বোর্ডে আছেন তাদের পারফরম্যান্স গড়পড়তায় পুরুষমাত্র বোর্ডের চেয়ে অনেক ভাল। অর্থাৎ, সমাজের এক অংশকে পঙ্গু করে রাখলে অর্থ বা পরমার্থ কোন দিকেই খুব সুবিধে হয় না। 

কিংকর্তব্যম –  সবাইকে নিয়ে চলা প্রয়োজন, নইলে ভবিতব্য দারিদ্র্য – বস্তুতে আর মননে।  

যারে তুমি ফেলিয়াছ নীচে সে তোমারে পশ্চাতে টানিবে 

আর,                                                    

দীন গৃ্হ, মলিন মন, লক্ষ্মী সেথা কুপিত হন।

১৮৮২ থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় আড়াইশ’ বছর ধরে ভারতে রিজার্ভেশনের চর্চা করার পর যোগেন্দ্র যাদব বলছেন, যথেষ্ট হয় নি বটে, কিছুটা তো হয়েছে। অনেকেরই বিশ্বাস, এ পথেই ভারতের ক্রমমুক্তি হবে। তিনি বলেন, অসুখ যখন একটু কমেছে, ওষুধ ছাড়বো কেন? অবিশ্বাসী বলে, ‘এত আস্তে অসুখ সারাতে সারাতে তো জীবন ফুরিয়ে যাবে। সাম্যের চত্বরে আমরাও যেতে চাই, চাই ঘর বাঁধতে। কিন্তু, তাড়াতাড়ি করতে হবে, “নাই যে বাকি সময় আমার…”                                                      

লেখা আছে মোর ললাটে, যেতে হবে উঁচতলাতে- রাখি না কো সন্দ তায়,                                             যাব কেন পদব্রজে? ঘোড়া চড়ে, গোঁফ চাগিয়ে যখন সেথা যাওয়াই যায়।

দেখ চাহি অন্তরে বাহিরেসমতার উদ্দেশ্য সমাজে দ্বন্দ্ব কমানো, আর একটি উদ্দেশ্য সংখ্যালঘুদের উন্নয়ন। কিন্তু, ভারতে অকিঞ্চিৎকর চাকরিতে রিজার্ভেশনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা অনেকটা এগোনোর পর আজ দ্বন্দ্ববর্ধন (মণিপুর মনে করুন) করছে শুধু নয়, ওবিসি (অন্য পশ্চাৎপদ গোষ্ঠী) আর ই ডব্লিউ সি (আর্থিক দুর্বল শ্রেণী) ঢুকে যাবার পর তা সংখ্যাগুরুর সংরক্ষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন জাট আর মারাঠাদের রিজার্ভেশনের ক্রমসংকোচমান ছোট কুঠুরির দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আকাশকুসুমের স্বপ্ন দেখানো চলছে।

আড়াইশ’ বছর রিজার্ভেশনের পরও দলিত মানুষ উঠে দাঁড়াতে পারছে না, আরও কিছুদিন অবলম্বন চাইছে। শুকনো, বিলীয়মান রুটিটির ভাগ অন্যরাও চাইতে শুরু করেছে তা কি ওষুধের কিউরেটিভ প্রপার্টির চেয়ে বেশী তাঁর অ্যাডিক্টিভ প্রপার্টির লক্ষণ নয়? তাই যদি হয় তাহলে আমরা অন্য সমাধান খুঁজব না কেন? তবে,

‘কাজ দাও’, ‘কাজ দাও’ বলো, সেটি যে-ই দেবে,                                                       কাজ করতে পারো কি না- তার খোঁজটি নেবে।

এক সরকারী দপ্তরীর কাছে শুনি, তার অফিসে রিজার্ভেশন- এর দৌলতে প্রমোশন পাওয়া অনেক বস উঁচু জাতের অধস্তনের কাছে তাঁদের কাজ করে দেওয়ার জন্য অনুরোধ-উপরোধ করতে থাকেন। তার মানে চাকরি পেলে কর্মকুশলতা বাড়ছে না। অথচ, রিজার্ভেশন -এর আসল উদ্দেশ্য ছিল, কুশলতা বাড়ানো।

শিক্ষা পাচ্ছি রীতিমত, পড়তে দিলেই থতমতপড়ানো হচ্ছে কিন্তু পড়ুয়ারা (বিশেষতঃ যারা গ্রামে থাকে) শিখছে না। ব্যাপারটা কেমনতর? 

ভারতের প্রায় ৬০০টি জেলা, প্রতি জেলায় ৩০টি গ্রাম, প্রতি গ্রামের ২০টি বাড়ির ৩ থেকে ১৬ বছর বয়সের প্রায় ৭ লাখ পড়ুয়ার সার্ভে করে ২০২২ সালের অ্যানুয়াল স্ট্যাটাস অফ এজুকেশন রিপোর্ট (ASER- 2022) বলছে ক্লাস ফাইভের গড়ে ৬১% ছাত্র ক্লাস টু’এর বই পড়তে পারছে না, আর পাটিগণিতের সরল ভাগ করতে পারছে না ক্লাস এইটের অর্ধেকের বেশী ছাত্র। এরা পাশ করে রিজার্ভেশনের দৌলতে কাজ পেলেও তা ঠিকমত করতে পারবে না আর সারা জীবন হীনমন্যতায় ভুগবে। অর্থাৎ, একটি মূল উদ্দেশ্য- মানুষকে মনোবল দেওয়া, আত্মবিশ্বাসী করা- এখানেই ধূলিসাৎ।

লোকসভায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দেশের সমস্ত স্কুলের প্রায় ৯% মাত্র একজন শিক্ষক দিয়ে চালানো হচ্ছে। সে সব স্কুল থেকে বেরোনো ছাত্রদের রিজার্ভেশন দেবার আবেদনের সাথে সুস্থ বাচ্চাকে পঙ্গু করে তাদের জন্য সহায়তাভিক্ষার মধ্যে তফাৎ কতটা?   

পথের নেশায় পাথেয় করি যে হেলামানুষের একটি নিহিত প্রবণতা হল আসল (অবজেক্টিভ) উদ্দেশ্য ভুলে রীতিনীতিতে জড়িয়ে পড়া। সমস্যা হ’ল রিজারভেশন নিয়ে চিৎকারের কণামাত্র শিক্ষার, বিশেষতঃ স্কুল শিক্ষার গুণগত স্তর নিয়ে শোনা যায় না। 

দুটি কথা মেনে নেওয়া প্রয়োজন।

১।  পিছিয়ে পড়া মানুষদের যতটুকু উন্নতি ঘটেছে তার প্রধান কৃতিত্ব নিশ্চিতভাবে কম্পালসারি ভ্যাকসিনেশন আর সরকারী স্কুলগুলির অল্পব্যয়ে শিক্ষা, রিজার্ভেশনের নয়।  

২। প্রকৃতি বা মানবসমাজ অজান্তেই অযোগ্যতার প্রতি ক্ষমাহীন।

যারা উঁচুতে তারা সেখানে যে কারণে সেই যোগ্যতাটি নীচের মানুষকে অর্জন করতে হবে- তা ছাড়া উপায় নেই। সোজা কথা, রিজার্ভেশনের চেয়ে ভাল স্কুল গড়ে তোলা, শিশুদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়া অসাম্য দূর করার ক্ষেত্রে অনেক কার্যকরী (২০২১ সালের সার্ভে বলছে ভারতের এক তৃতীয়াংশ শিশু অপুষ্টি’র শিকার) ।

চীনে আর বাংলাদেশে রিজার্ভেশন নেই, পাকিস্তানে সিভিল সারভিসের চাকরিতে আট কিসিমের কোটা মিলিয়ে  ৯২.৫% রিজার্ভেশন। হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট ইনডেক্স-এ পাকিস্তানের অবস্থা কি অন্য দুটি দেশের চেয়ে ভাল? ভারতেও রিজার্ভেশনের দিকে তাকিয়ে বহু যুগ কেটে গেল। সুকুমার রায়ের বুড়ির বাড়ি’র মত তাকে নানা রকম জোড়াতালি দেবার চেষ্টা ছেড়ে নতুন প্রজন্মকে শরীরে মনে সবল করার দিকে নজর দিলে, দেশে না হলেও ভয়ঙ্কর জনসঙ্কোচনের মুখোমুখি উন্নত দেশগুলোতে ভারতীয় জনগোষ্ঠীর কাজের অভাব হবে না।

ভয়কে জয় করতে চাও, ভয়ের মধ্যে হেঁটে যাওরিজার্ভেশন উঠে গেলে উচ্চবর্ণ ছিঁড়ে খাবে এই ভাবনার সাথে মিল অর্থনীতি মুক্ত হলে ভারতীয়দের ব্যবসা শুকিয়ে যাবে এই ভাবনার। ১৯৯০-এর দশকে  সেই কাণ্ড হবার পর ভারতীয় ব্যবসার উন্নতি বই অবনতি হয় নি। বাইরের জগতের সাথে সহযোগিতা আর প্রতিযোগিতার ফলে কাজের মান উন্নত হয়েছে। ভারতীয় শিল্প আর কর্মকুশল মানুষ ঈর্ষণীয় জায়গা করে নিয়েছে বিশ্বের বহু ক্ষেত্রে। 

একটু সাফাই                    আবোল তাবোল বকছ বেদম, জাগছে মনে সন্দ,

                           কথঞ্চিতের আড়ালেতে লোকটি বেজায় মন্দ।

এখনই রিজার্ভেশন সম্পূর্ণ তুলে দাও- এ ভলডেমর্টি দাবী নয় আমার। আবেদন এই যে সরকার বাহাদুরেরা রিজার্ভেশনের পেছনে পড়ে না থেকে তথাকথিত পিছিয়ে পড়া মানুষের শেখার, যোগ্যতা অর্জন করার  পরিবেশ তৈরি করুন। আমার ছেলেটি দুর্বল- এই মাতৃভাব সন্তানের বিকাশের পক্ষে বড় বাধা। তারা কারও চেয়ে কম নয়- সহানুভূতিশীলরা এ ভাবনাটি শুধু বক্তৃতা আর কবিতায় বেঁধে না রেখে আত্মস্থ করুন।  তাদের অল্প ব্যয়ে উঁচু মানের স্কুলশিক্ষা আর পুষ্টির ব্যবস্থা করলে বাকিটা তথাকথিত পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীরা নিজেরাই দেখে নেবে। সেটুকু না করতে পারলে আজ থেকে আরও এক শতাব্দী পরে ভর্তি হবার পর পাঠক্রমের সাথে এঁটে উঠতে না পেরে তারা তখনকার আইআইটি/আইআইএম/বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে যেতে বাধ্য হবে (গত পাঁচ বছরে এই সংখ্যা ১৩০০০-এর বেশী)। আর শতাব্দীর পর শতাব্দী রিজার্ভেশনের ব্যর্থতা দেখে সেদিনের কবি অশ্রুসিক্ত কী-প্যাডে লিখবেন-   

যুগ যুগ ধরে হে অন্ধ দলিত-প্রেমিক,                                                                                  দিলে শুধু শুষ্ক প্রেম, দেখালে না দিক।।

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৩                                                                   -অরিজিৎ চৌধুরী

সতর্কীকরণ- কথঞ্চিতে আমার পড়া সাহিত্যিকরা প্রায়ই অনুরণিত হ’ন। তাঁদের লেখাগুলি প্রসঙ্গের সাথে অদল বদল করে নেওয়ায় সব সময় উদ্ধৃতিচিহ্ন দেওয়া সম্ভব হয় না। এ ব্যাপারে আমি অসহায়, পাঠকের মার্জনাভিক্ষু। 

 

তথ্যসূচী

১। India Population Distribution in 2021, by Age – GlobalData

২। ইউটিউবে যোগেন্দ্র যাদবের বক্তৃতাবলী

৩। Why Diversity Matters: Women on Boards of Directors | Executive and Continuing Professional Education | Harvard T.H. Chan School of Public Health

৪। https://www.lawyersclubindia.com/articles/reservation-system-india-and-abroad-is-reservation-still-needed-14200.asp

৫। Press Information Bureau (pib.gov.in)

৬। What’s next for poverty reduction policies in China? (worldbank.org)

৭। allindiaaser202217_01_2023final.pdf (asercentre.org)

৮। MoE stats reveal over 13,600 SC, ST, OBC students dropped out of central varsities, IITs, IIMs in 5 years (onmanorama.com)

অরিজিৎ কথঞ্চিত by Arijit Choudhuri

5 thoughts on “অরিজিৎ কথঞ্চিত by Arijit Choudhuri

  • December 15, 2023 at 1:17 pm
    Permalink

    আমি কোথাও পড়েছিলাম, অম্বেদকর নিজেই এই reservation ব্যাপারটা চালু করার ব্যাপারে খুব উৎসাহী ছিলেন না, এবং বলেছিলেন, কোনও অবস্থাতেই যেন সেটা ১০ বছরের বেশি চলতে দেওয়া না হয়। নচেৎ মানুষের মধ্যে complacency এসে যাবে। তিনি দূরদর্শী ছিলেন, আরো কয়েক বছর বেঁচে থাকলে কি হত বলা মুশকিল।
    আজ এই রিজার্ভেশন একটা ভোট ব্যাংকের জন্য রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সেই জন্যেই, মূল development এর জন্য কারুর মাথাব্যথা নেই! যে বা যারা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে এই সুযোগ নিয়েই চলেছে, তাদেরকে অবিলম্বে আয়ের পরিমাণের ভিত্তিতে রিজার্ভেশনের বাইরে বের করা দরকার। আর সেটা হলেই, ক্রমশ অনেকেই এই % এর হিসেবের বাইরে চলে আসতে পারবে!

    Reply
    • December 15, 2023 at 4:30 pm
      Permalink

      ভাল লিখেছেন।
      রাজনীতির ঘেরাটোপে আটকে পড়ে আছে এই সংরক্ষণ। এটা অনেকেই বুঝতে পারছে কিন্তু এর বাইরে বেরোতে কেউ চাইবে কিনা সন্দেহ। তাহলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে সবল দলিতদের দাদাগিরি কি করে চলবে?

      Reply
  • December 15, 2023 at 2:32 pm
    Permalink

    অরিজিতের লেখার সাথে বহু ক্ষেত্রে একমত পোষণ করি।
    ১. দলিতদের মধ্যে শিক্ষিতের সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে সেটা শুধু অর্থনৈতিক ভাবে অগ্রসর গোষ্ঠী ভোগ করে।
    ২. আমি আমার বন্ধুমহলে অনেকসময় বলেছি যে যাঁরা কিছুটা সুযোগ পেয়ে একটা প্ল্যাটফর্মে পৌঁছে গেছেন, তাদের বাদ দিতে আপত্তি কি রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা?
    ৩. আমার মনে হয় সেক্ষেত্রে একটা নিদ্দিষ্ট সংখ্যায় বেঁধে রাখতে সুবিধা হয় । এর জন্য যারা শিক্ষা বা টাকা পয়সার দিক দিয়ে একটু এগিয়ে গেছে তারা নিদ্দিষ্ট সীমার বাইরে যেতে পারবে না কোনদিন।
    ৪. সংরক্ষণ দলিতদের প্রয়োজন, তবে সত্যিকারের যাদের প্রয়োজন তাদের। সবার নয়। অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যারা এগিয়ে গেছে তাদের বাদ দিতে হবে। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা ঝেড়ে ফেলে।

    Reply
  • December 18, 2023 at 11:24 am
    Permalink

    My radical belief is that reservation on the basis of economic and social disparity should be restricted in primary education catered by state ,religious trusts and private stakeholders.This will result a forced churning of social values limit elitism and create a peer pressure for marginalised people to improve themselves for future competition.This is the only way to equality and competive spirit

    Reply
  • January 4, 2024 at 11:27 am
    Permalink

    Incentivisation of education and skill development is required for socially backward and economically weaker section students. The incentive may even include giving financial help to the parents letting their wards go to school.

    But there may not be any reservations about the job. Jobs represent professional operational areas. One mistake by an under-deserving person can create havoc in hospitals, engineering construction, academic teaching, scientific research, public services, etc. A country can hardly afford to have a system full of uncertainty.

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *