( _A regular column in Bangla, by Arijit choudhuri)_

অরিজিৎ কথঞ্চিৎ/ অরিজিতের কলম

ইন্দোনেশিয়া আর করোনা

আজ থেকে যে কথা শুরু হ’ল দেখা যাক সে গড়ায় কত দিন আর কত দূর। চেষ্টা থাকবে, যার মধ্যে আমাদের দৈনন্দিন ঘোরাফেরা, কথাকে সেই আটপৌরের গন্ডিতে আটকে রাখার। আজ আমাদের এক প্রতিবেশী দেশের কথা লিখি যার নাম ইন্দোনেশিয়া। ১৬০০০ দ্বীপ নিয়ে দৈর্ঘ-প্রস্থে প্রায় আমেরিকার মতন বড় এই দেশের প্রতি দ্বীপে অন্ততঃ এক দিন কাটাতে একজনকে প্রায় ৪৪ বছর সময় দিতে হবে।

কাজের সূত্রে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তায় ২০১০ সাল থেকে বহুবার যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। জানতাম, দেশটা মুসলিম প্রধান (৮৭% মুসলিম) তবু তাদের পতাকায় চাঁদ-তারা নেই। জাতীয় প্রতীকে ঈগলের নখে ধরা একটি ফিতেয় লেখা ‘ভিন্নতার মাঝে ঐক্য’ (Bhinneka Tunggal Ika)। শেষ  আর ঈগলটির বুকে একটি তারার চার পাশে শষ্য-গোরু-বটগাছ আর একটি বালা ধরণের কিছু।  জাকার্তায় মিনি ইন্দোনেশিয়া নামে একটা পার্ক আছে, যাতে ওখানকার নানা জায়গার বাড়িঘর দেখলে দেশটা যে কত বিচিত্র আন্দাজ করা যায়।  সুতরাং, ভারতের মত ওদেশকেও এক থাকতে হলে বিবিধের মাঝে মিলনের খোঁজ করতেই হবে।

নাম বদলের হিড়িক পড়া দেশ থেকে গিয়ে কৃষিপ্রধান এই দেশটার যে বিষয়টা অবাক করে, তা হ’ল নাম- মানুষের তো বটেই, জিনিষেরও। কিন্তু ওখানকার কিছু সহকর্মীর নাম ছিল চন্দ্র সূর্য, সুদরমনো (সুধর্ম), রত্না, পুরনমা (পূর্ণিমা) ইত্যাদি। এঁদের মধ্যে কেউ-ই হিন্দু নন। বিশুদ্ধ মুসলিম নাম বিরল হলেও আছে, যেমন আলফিয়ান হুসেন। প্রথম দিনই গরুঢ় এয়ারলাইন্সের  প্লেন আর রাস্তায় গণেশ ব্যাঙ্ক, মম্দিরি ব্যাঙ্ক ইত্যাদি দেখে অবাক হয়েছিলাম। পরে হোটেলের কাছে হাঁটতে হাঁটতে দেখি, একটা বাড়ি সারাই হচ্ছে, তার নাম বাণপ্রস্থ। শহরে জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনেই দেখি গীতার প্রচ্ছদে বহুবার দেখা রথারূঢ় কৃষ্ণ-অর্জুনের বিশাল স্থাপত্য।

একবার ওখানে থাকার সময়েই কাগজে দেখি, ওখানকার কিছু উগ্র ধার্মিক দাবী করেছে এসব নাম বদল করে ইসলামী নাম রাখা হোক। তার উত্তরে এক মন্ত্রী বলেছেন, ‘এরকম নাম-ই তো ইন্দোনেশিয়ার অনন্য (ইউনিক) বৈশিষ্ট্য। নাম বদলানো মানে দেশের এই বিশেষতাকে খুইয়ে ফেলা।

ইন্দোনেশিয়ার গল্প অনেক বাড়ানো যায়। আজ এটুকুই।

বাংলায় বলে, ‘কানু বিনে গীত নাই।‘ এখনকার কথা হ’ল, করোনা ছাড়া লেখা নাই। তাই একটু তার কথা বলে শেষ করি।

চারদিকে দেখছি কুঁকড়ে আছে, কষ্ট পাচ্ছে, মারা যাচ্ছে মানুষ। কুকুর বেড়াল, পাখীরা বেশ ভাল-ই আছে। ঈশ্বর কেন এমন করলেন? মানুষ-ই তো তাঁর কাছে প্রার্থনা করে, পুজো করে। তারাই তো জানে ঠিক কোন দিকে বসে কোন ভাষায় স্তূতি করলে ভগবান খুশি হবেন, কোন সময় অনেক দূরের নদীতে ডুব দিয়ে উঠলে সহজ হবে জীবন। তাহলে কি মানুষের এত বিবিধ উপচার, শক্ত ভাষার প্রার্থনা ভগবান আর শুনতে চাইছেন না? পতঙ্গ, পাখী, পশুদের সরল ভাষার আবেদন-ই কি তাঁর কাছে পৌঁছচ্ছে?

আপনাদের কি মনে হয়?

 

ইন্দোনেশিয়ার পতাকা আর জাতীয় প্রতীক

About the author :

Arijit Chaudhuri, located in Navi Mumbai, petroleum geologist by profession. Also interested in issues concerning pollution, climate change and fast depleting groundwater reserves.

Travelling, reading, writing articles, composing rhymes and recitation are his hobbies.

( _A regular column in Bangla, by Arijit choudhuri)_

One thought on “( _A regular column in Bangla, by Arijit choudhuri)_

  • May 15, 2021 at 8:27 pm
    Permalink

    Fantastic. Very informative sir. made of 16,000 islands and it will take 86 years to see each island in a day. What a information.
    Thanks.

    Reply

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *